সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত করেছে দলটি। পরে সোমবার (২ জুন) মজলিসে শুরার বিশেষ অধিবেশনে তাকে শপথ পড়ান জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বুধবার (৪ জুন) জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের চ্যানেল 24 কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত সোমবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার বিশেষ অধিবেশনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ পড়িয়েছেন। তবে এটিএম আজহারুল ইসলামকে কী দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন অ্যাডভোকেট জুবায়ের।
এর আগে গত ২৮ মে এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাওয়ার পর বিভিন্ন মাধ্যমে গুঞ্জন ছড়ায় যে তিনি জামায়াতের আমির হচ্ছেন। কিন্তু দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার এখনই আমির হওয়ার সুযোগ নেই। জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন দলের রুকনদের (সদস্য) প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে। বর্তমান আমির ডা. শফিকুর রহমান তিন বছর (২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫) মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। সে হিসেবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর তার মেয়াদ শেষ হবে। আর এ বছরের শেষের দিকে আবার জামায়াতের আমির পদে নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এটিএম আজহারুল ইসলামকে দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির করা হতে পারে। কারণ দলটির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যৈষ্ঠ নেতা এটিএম আজহার। বর্তমানে জামায়াতের নায়েবে আমির তিনজন। তারা হলেন দলের সাবেক তিন সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান, সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও আনম শামছুল ইসলাম। গঠনতন্ত্রে নায়েবে আমিরের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা নেই। গঠনতন্ত্রে ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যক’ বলে উল্লেখ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে রংপুরে সংঘটিত গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ মোট ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ড ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করে। সে রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই তিনি রিভিউ আবেদন করেন, যেখানে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তার আপিল শুনানির অনুমতি দেন। এরপর নিয়মিত আপিলের শুনানি শেষে ২৭ মে আদালত রায় ঘোষণা করেন, যেখানে তাকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। ২৮ মে মুক্তি পেয়ে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বের হন।